সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
১৯ বছর ধরে পেটে কাঁচি বয়ে বেড়ানোর যন্ত্রণা থেকে অবশেষে মুক্তি মিলেছে বাচেনা খাতুনের (৫০)। আজ সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ওয়ালিউর রহমানের নেতৃত্বে চিকিৎসক দল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাচেনার পেট থেকে কাঁচি অপসারণ করেন।
অস্ত্রোপচারের পর বাচেনা খাতুনকে জেলা হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ওয়ালিউর রহমান বলেন, বাচেনা খাতুনের পেট থেকে আর্টারি ফরসেপসটি সফলভাবে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি আপাতত আশঙ্কামুক্ত।
ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের নওদাহাপানিয়া গ্রামের আবদুল হামিদের স্ত্রী। এ ঘটনায় ৪ জানুয়ারি দৈনিক শিক্ষা ডটকম অনলাইনে ‘অপারেশনের ১৯ বছর পর রোগীর পেটে মিললো কাঁচি!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আজ বিকেলে সদর হাসপাতালে কথা হয় বাচেনার পুত্রবধূ রোজিনা খাতুনের সঙ্গে। রোজিনা বলেন, ১৯ বছর আগে তাঁর শাশুড়ির পিত্তথলিতে পাথর হয়। সে সময় মেহেরপুরের গাংনী শহরের রাজা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাথর অপসারণ করা হয়। কিন্তু পেটের ভেতরে কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। সেই থেকে তাঁর শাশুড়ি পেটের ব্যথায় প্রায়ই ছটফট করতেন। মনে করতেন, গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা। গ্যাস্ট্রিক উপশমের ওষুধ খেতেন।
সম্প্রতি ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাচেনা খাতুনকে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। সেখানে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করলে বাচেনার পেটের ভেতরে কাঁচির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় টাকার অভাবে অস্ত্রোপচার ছাড়াই রাজশাহী থেকে ফিরে আসেন। ৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভর্তির ছয় দিন পর আজ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কাঁচি অপসারণ করা হয়।
চিকিৎসক ওয়ালিউর রহমান বলেন, আগেরবার অস্ত্রপচারের সময় চিকিৎসকের অসাবধানতার কারণে পেটের ভেতরে আর্টারি ফরসেপস রাখার ঘটনা ঘটেছে। সাধারণত অস্ত্রোপচারের শুরুতে যেসব সরঞ্জাম বের করা হয়, অস্ত্রোপচার শেষে সেগুলো গুনে মিলিয়ে নেওয়া হয়। তখন যদি সেটা করা হতো, তাহলে বাচেনা খাতুনকে এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাচেনা বেগম পেটের ব্যথায় এত দিনে আলট্রাসনোগ্রাম করেছেন। কিন্তু আলট্রাসনোগ্রামে ধাতবজাতীয় কিছু ধরা পড়ে না, যা এক্স-রেতে ধরা পড়ে।